| বঙ্গাব্দ

মির্জা ফখরুলের আহ্বান: সব দল ভোটে আসুক, অর্থবহ নির্বাচনেই গণতন্ত্রের পুনর্জন্ম

রিপোর্টারের নামঃ BDS Bulbul Ahmed
  • আপডেট টাইম : 18-10-2025 ইং
  • 149352 বার পঠিত
মির্জা ফখরুলের আহ্বান: সব দল ভোটে আসুক, অর্থবহ নির্বাচনেই গণতন্ত্রের পুনর্জন্ম
ছবির ক্যাপশন: মির্জা ফখরুলের আহ্বান

মির্জা ফখরুলের আহ্বান: “সব দল ভোটে আসুক, অর্থবহ নির্বাচনই হবে গণতন্ত্রের পুনর্জন্ম”

প্রতিবেদক: বিডিএস বুলবুল আহমেদ


রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি ঐক্যের আহ্বান

বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিনের বিভক্তি ও অবিশ্বাসের আবহে এবার নতুন আহ্বান জানালেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
তিনি বলেছেন,

“ছোটখাটো দূরত্ব ভুলে সব রাজনৈতিক দলকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে, এবং এখন সময় সংসদমুখী হওয়ার।”

শনিবার (১৮ অক্টোবর ২০২৫) দুপুরে ঢাকার পানি ভবনে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারি ইউনিয়নের সাধারণ সভা ও সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।


রাজনীতিতে নতুন বাস্তবতা: জুলাই সনদ ও ঐকমত্যের প্রেক্ষাপট

মির্জা ফখরুল তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে,

“ঐতিহাসিক জুলাই সনদে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল স্বাক্ষর করেছে—এটা বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক অনন্য ঘটনা। এটি যদি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে রাজনীতি স্বচ্ছ হবে এবং গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শক্তিশালী হবে।”

তিনি আরও বলেন,

“সংসদ ভবনের সাম্প্রতিক সংঘর্ষ ছিল অত্যন্ত অপ্রত্যাশিত। সব রাজনৈতিক দলের উচিত দায়িত্বশীল আচরণ করা এবং জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করা।”

এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বিএনপি মহাসচিব দেশের চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে এক ধরনের সংলাপমুখী মনোভাব প্রকাশ করলেন, যা সাম্প্রতিক সময়ে বিরল দৃশ্য।


আগামী নির্বাচন নিয়ে ফখরুলের বার্তা

মির্জা ফখরুল স্পষ্টভাবে বলেন,

“আগামী জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমেই নির্ধারিত হবে বাংলাদেশ কি উদারপন্থী রাজনীতির দিকে যাবে, না কি আবার একদলীয় শাসনের পথে হাঁটবে।”

তিনি ইঙ্গিত দেন, বিএনপি অন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করছে, যেখানে জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত থাকবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বক্তব্যটি মূলত জুলাই সনদের পরবর্তী ধাপ—যেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট এখন আলোচনামুখী রাজনীতিয় ফিরতে চাইছে।


রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য

২০২৪ সালের নির্বাচন বর্জনের পর থেকে বিএনপি এক ধরনের বিচ্ছিন্ন কৌশল অনুসরণ করছিল।
কিন্তু ২০২৫ সালে অন্তবর্তী সরকারের প্রতিষ্ঠা ও জুলাই সনদে অধিকাংশ দলের অংশগ্রহণ—এই নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় দলটি এখন পুনরায় নির্বাচনী রাজনীতিতে ফিরে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।

ফখরুলের এই আহ্বান মূলত রাজনৈতিক সহাবস্থান ও গণতান্ত্রিক প্রতিযোগিতা পুনরুদ্ধারের একটি ইঙ্গিত।
তিনি বলেন,

“দেশের মানুষ আজ গণতন্ত্রে বিশ্বাস রাখতে চায়। এই বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হলে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ জরুরি।”


সংসদমুখী রাজনীতির গুরুত্ব

মির্জা ফখরুল তার বক্তৃতায় বলেন,

“আমরা দেখতে চাই সংসদ হোক আলোচনার কেন্দ্র। রাজনৈতিক দলগুলো রাস্তায় নয়, সংসদে নিজেদের মতামত তুলে ধরুক।”

এই বক্তব্য বাংলাদেশের রাজনীতিতে সংসদীয় বিতর্ক ও নীতিনির্ধারণের সংস্কৃতি পুনরুদ্ধারের প্রস্তাব হিসেবে দেখা হচ্ছে।


ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে বিশ্লেষণ

বাংলাদেশের রাজনীতিতে বড় ধরনের নির্বাচনপূর্ব ঐকমত্য খুবই বিরল।
১৯৯০ সালের গণ-আন্দোলনের পর, ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার প্রবর্তন এবং ২০০৮ সালে নির্বাচন—এই তিনটি ঘটনাই ছিল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের মাইলফলক।

২০২৫ সালের প্রেক্ষাপটে মির্জা ফখরুলের আহ্বান সেই ধারাবাহিকতার অংশ—যেখানে তিনি মূলত চাইছেন

  • রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা হোক অংশগ্রহণমূলক,

  • বিরোধিতা হোক নীতিনির্ভর,

  • এবং গণতন্ত্র হোক প্রাতিষ্ঠানিক


উপসংহার

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য শুধু রাজনৈতিক আহ্বান নয়, এটি একটি সংকেতমূলক বার্তা—বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পুনরায় অংশগ্রহণ, সংলাপ, ও পারস্পরিক আস্থার প্রত্যাবর্তনের ডাক।
যদি এই মনোভাব বাস্তব রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় প্রতিফলিত হয়, তবে আগামী নির্বাচন সত্যিকার অর্থেই অর্থবহ হয়ে উঠতে পারে—যেখানে গণতন্ত্রের পুনর্জন্ম ঘটবে।


সূত্রসমূহ

  1. প্রথম আলো, “সব দলকে ভোটে অংশ নেওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের”, ১৮ অক্টোবর ২০২৫।

  2. বাংলাদেশ প্রতিদিন, “অর্থবহ নির্বাচনের ডাক বিএনপি মহাসচিবের মুখে”, ১৮ অক্টোবর ২০২৫।

  3. যুগান্তর, “সংসদমুখী রাজনীতির ওপর গুরুত্ব দিলেন মির্জা ফখরুল”, ১৮ অক্টোবর ২০২৫।

    প্রতিবেদক:বিডিএস বুলবুল আহমেদ
    আরও খবর জানতে ভিজিট করুনবাংলাদেশ প্রতিদিন

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
নামাজের সময়সূচী
জাতীয় সঙ্গীত
©সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন সত্যের সন্ধানে সব সময় | আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ
সকল কারিগরী সহযোগিতায় BDS Digital Marketing Agency