প্রতিবেদক: বিডিএস বুলবুল আহমেদ
বাংলাদেশে গণভোট ও ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতবিরোধ চললেও সারাদেশে নির্বাচনি প্রস্তুতি জোরদার করেছে বিএনপি। দলীয় প্রার্থী বাছাই, তৃণমূলে উঠান বৈঠক ও ‘ধানের শীষ’–কেন্দ্রিক গণসংযোগ—এসব কার্যক্রম অন্তত এক মাস ধরে গতি পেয়েছে বলে দলীয় সংশ্লিষ্টরা জানান। এদিকে বিবিসি বাংলাকে দেওয়া দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানিয়েছেন, তিনি নির্বাচনের আগেই দেশে ফিরবেন এবং ভোটেও অংশ নেবেন—এ ঘোষণায় বিএনপির মাঠতৎপরতা ও জোট–কৌশলে স্পষ্ট টাইমলাইন যোগ হয়েছে।
আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম সরকারের ঘোষণায় নিষিদ্ধ থাকায় (এবং দলটির নিবন্ধন স্থগিত/বাতিল বিষয়েও অনিশ্চয়তা থাকায়) এবারের সম্ভাব্য লড়াইয়ের ফোকাস বিএনপি বনাম ইসলামপন্থি ও ডানঘরানার দলগুলোর দিকে সরে গেছে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। আন্তর্জাতিক সংস্থার পর্যবেক্ষণ ও বৈশ্বিক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে বলা হয়েছে—আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আপাতত বহাল; মামলাজট না মিটলে অংশগ্রহণ অনিশ্চিত।
এদিকে জামায়াতে ইসলামী প্রায় এক বছর আগেই মাঠে নেমে স্থানীয় পর্যায়ে সাংগঠনিক তৎপরতা বাড়িয়েছে এবং সব ৩০০ আসনে প্রার্থী প্রস্তুত—দলটির মহাসচিব মিয়া গোলাম পরওয়ারের এমন ঘোষণার খবর মূলধারার গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এতে সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায় বিএনপি–জামায়াত দ্বিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস মিলছে।
জুলাই সনদের ধারাগুলো আইনি স্বীকৃতি পেতে গণভোটের প্রশ্নটি এখন রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রভাগে। জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি দল গণভোটে পিআর (Proportional Representation) ব্যবস্থার প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করতে চায়—“জনসমর্থন পেলে সব দল মেনে নিক”—এ মর্মে ঘোষণাও এসেছে। অন্যদিকে বিএনপির ভেতরে আলোচনায় আছে—গণভোটকে নির্বাচনের দিনেই করার প্রস্তাব; চূড়ান্ত খসড়া–সমঝোতা ও সময়সূচি নিয়েই এখন টানাপোড়েন।
বিএনপি মিত্রদের সঙ্গে সিট–শেয়ারিংয়ে পর্যায়ক্রমে অগ্রসর হচ্ছে। স্থায়ী কমিটির সাম্প্রতিক বৈঠকে এক–একটি আসনে সিঙ্গেল ক্যান্ডিডেট চূড়ান্ত করার ‘গ্রিন সিগন্যাল’ দ্রুত দেওয়ার কথা আলোচনায় উঠেছে; তারেক রহমান নিজে মনোনয়ন–প্রক্রিয়া নজরদারি করছেন বলে দলের শীর্ষ নেতারা জানান। অন্যদিকে ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ ১৪০ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নাম প্রকাশ করেছে—বড় জোট–সমীকরণে এই তালিকা গুরুত্বপূর্ণ ইনপুট হয়ে উঠতে পারে।
সিরাজগঞ্জসহ মধ্য–উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি আসনে বিএনপি ও জামায়াত উভয়েরই সমান্তরাল প্রচার লক্ষ্য করা যাচ্ছে—কোথাও উঠান বৈঠক, কোথাও স্থানীয় উৎসব–কেন্দ্রিক জনসম্পৃক্ততা। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর মাঠ–রিপোর্টে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ অনুপস্থিত থাকায় ঐতিহ্যগতভাবে আওয়ামী লীগ–সমর্থকদের ভোট আচরণ এবারে ফল নির্ধারণে বড় ফ্যাক্টর হতে পারে—তারা আদৌ কেন্দ্রে যাবেন কি না, গেলে কাকে দেবেন—এ প্রশ্নই আলোচনায়।
জামায়াতের বক্তব্য—তারা আগেভাগে একক প্রার্থীর ওপর ভর করে ঘরে–ঘরে সংগঠন করেছে; ভোটারদের নিরাপত্তাবোধ ও “পরিবর্তনের চাহিদা” তাদের পক্ষে। বিএনপির বক্তব্য—একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী থাকলেও সবাই ‘ধানের শীষ’–এর জন্যই কাজ করছে; দলে কোন্দল নেই, ঐক্যবদ্ধ প্রচারণাই তাদের শক্তি। বাস্তবে যে–যে আসনে বিএনপি ও জামায়াত মুখোমুখি, সেসব জায়গায় আওয়ামী লীগ–সমর্থকদের ভোট–ঝোঁক শেষ মুহূর্তে সমীকরণ বদলে দিতে পারে—এমনটাই স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের সতর্কতা।
এবারের নির্বাচন ঘিরে তিনটি রেখা স্পষ্ট—
প্রক্রিয়া বনাম সময়সূচি: গণভোট–‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়নে কোন ক্রমে এগোনো হবে—এটাই রাজনৈতিক মতভেদের কেন্দ্র।
প্রতিদ্বন্দ্বিতার নতুন মানচিত্র: আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতি প্রতিযোগিতাকে বিএনপি বনাম ইসলামপন্থি/ডানঘরানা ব্লকে ঠেলে দিয়েছে; এতে বহু এলাকায় ত্রিমুখী ভোটব্যবহার (নির্বাচনে যাওয়া/না–যাওয়া/পক্ষবদল) গুরুত্বপূর্ণ।
সংগঠন–মেশিনারি বনাম বার্তা–কৌশল: বিএনপির ‘সিঙ্গেল ক্যান্ডিডেট’ ও মিত্রদের সাথে উইনেবিলিটি–কেন্দ্রিক সিট–শেয়ারিং বনাম জামায়াতের আগাম–প্রস্তুতি—এই দুই মডেলের সংঘর্ষই শেষরাতে ফল নির্ধারণে বড় ভূমিকা নেবে।
Dhaka Tribune — “Tarique tells BBC Bangla: It is time to return to Bangladesh.”
Reuters — “Bangladesh bans activities of Awami League…”; AP News — “Bangladesh’s interim government bans Awami League.”
The Daily Star / bdnews24 / TBS — “PR inclusion in referendum” ও বিএনপির গণভোট–টাইমলাইন/মনোনয়ন প্রস্তুতি।
প্রতিবেদক:বিডিএস বুলবুল আহমেদ
আরও খবর জানতে ভিজিট করুন: বাংলাদেশ প্রতিদিন
| ফজর | 3:50 AM ভোর |
|---|---|
| যোহর | 12:04 দুপুর |
| আছর | 4:44 PM বিকাল |
| মাগরিব | 6:50 PM সন্ধ্যা |
| এশা | 8:17 PM রাত |
| জুম্মা | 1.30 pm দুপুর |