ঢাকা, ২৩ আগস্ট ২০২৫ (বিশেষ প্রতিবেদক) – ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সভাপতিসহ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব ভারতে পালালেও দেশের শিল্পাঞ্চলে এখনো দলটির নেতাকর্মীরা নিয়ন্ত্রণ করছে ঝুট ব্যবসা। শিল্প পুলিশের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, গাজীপুর ও আশপাশের শিল্পাঞ্চলে অন্তত ২৬৭টি কারখানার মালিক আওয়ামীপন্থী, যেখানে বিএনপিপন্থী মালিকের সংখ্যা মাত্র ৫ জন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব কারখানার মালিকরা দলীয় কার্যক্রমে অর্থ জোগানোর পাশাপাশি ঝুট ব্যবসার বড় অংশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। বিএনপি ক্ষমতাসীন না হয়েও ঝুট ব্যবসার দখল নিতে গেলে সংঘর্ষ ও দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে, তবে নেপথ্যে প্রভাব বিস্তার করছে আওয়ামীপন্থী মালিকপক্ষ ও তাদের অনুসারীরা।
শিল্প পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—
টঙ্গী, গাছা, বাসন, কোনাবাড়ি, কাশিমপুরে ২৬৭ জন মালিক আওয়ামীপন্থী
৫ জন বিএনপিপন্থী, এবং
১১৫ জন মালিক রাজনীতি থেকে দূরে থাকেন
তবে বাস্তবে বিএনপির নামে দখলদারিত্ব চললেও আড়ালে আওয়ামী নেতারাই নিয়ন্ত্রণ করছেন ঝুট ব্যবসার সিংহভাগ।
গত ২৮ জুন গাজীপুরা এলাকায় সাটার্ন গার্মেন্টসের ঝুট নিয়ে সংঘর্ষে আহত হন অন্তত ১০ জন। একপক্ষে ছিলেন বিএনপি নেতা হালিম মোল্লা, অন্যপক্ষে টঙ্গী ৫০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি নেতা কাজী হুমায়ুন। তদন্তে উঠে এসেছে, আওয়ামীপন্থী প্রভাবশালী নেত্রী দিলশান আরা বেগমের হয়ে গোপনে বিএনপি নেতারা ব্যবসা করছিলেন।
এছাড়া পাগাড় এলাকায় ঝুট নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপ সংঘর্ষে জড়ায়। এখানে আওয়ামী নেতা ওমর ফারুক ও বিএনপির একটি অংশ যৌথভাবে ব্যবসা করছিলেন।
বাসন এলাকার ম্যানাল ফ্যাশনের মালিক রাশিদুল হাসান চাঁদ দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান কচির ঘনিষ্ঠ ছিলেন। কিন্তু ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর ফেসবুক থেকে দলীয় ছবিগুলো মুছে বিএনপির সঙ্গে মিশে যান। তবু গোপনে আওয়ামী নেতাদের সহযোগিতায় কারখানায় ঝুট ব্যবসা চালু রেখেছেন।
একইভাবে ওশান গ্রুপের মালিক মামুন জুবেরী মির্জা ও এমডি রায়হান ফরিদপুর আওয়ামী রাজনীতির ঘনিষ্ঠজন। রিপোর্টে বলা হয়েছে, তারা এখনো গোপনে অর্থ জোগান দিয়ে যাচ্ছেন।
বাসন থানার সভাপতি তানভীর সিরাজ ঝুট ব্যবসার বড় অংশ ভাগাভাগি করেন আওয়ামী পরিবারের রিপন সরকার ও রাকিব সরকারের সঙ্গে।
গাছা থানার ইস্ট ওয়েস্ট কারখানার ঝুট ব্যবসা বহিষ্কৃত বিএনপি নেতাদের নামে হলেও নিয়ন্ত্রণে আছেন আগের আওয়ামী ব্যবসায়ী চক্র।
সাইনবোর্ড এলাকার ঝুট ব্যবসায় পাগলা মোহাম্মদের নাম থাকলেও কার্যত নিয়ন্ত্রণ আওয়ামী নেতা মশিউর রহমান মশি, আমিন উদ্দিন সরকার, তৌহিদুল ইসলাম দীপদের হাতে।
প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, বিএনপির ভেতরে দখলদারি সংঘর্ষ চললেও আওয়ামী নেতারা নেপথ্যে থেকে ব্যবসার মুনাফা পাচ্ছেন। এতে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, অথচ আর্থিক সুবিধাভোগী হচ্ছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামীপন্থী গোষ্ঠী।
শিল্প পুলিশ মনে করছে, এই অস্বচ্ছ ব্যবসা কেবল শ্রমিক অস্থিরতা নয়, রাজনৈতিক অস্থিরতারও বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শিল্প পুলিশের গোপন প্রতিবেদন, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক সূত্র
প্রতিবেদক:বিডিএস বুলবুল আহমেদ
আরও খবর জানতে ভিজিট করুন: বাংলাদেশ প্রতিদিন
| ফজর | 3:50 AM ভোর |
|---|---|
| যোহর | 12:04 দুপুর |
| আছর | 4:44 PM বিকাল |
| মাগরিব | 6:50 PM সন্ধ্যা |
| এশা | 8:17 PM রাত |
| জুম্মা | 1.30 pm দুপুর |