রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা মহাখালী এলাকায় আজ সোমবার দ্বিতীয় দফায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন।
প্রথম দফায় সড়ক ছাড়ার প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে তাঁরা মহাখালীতে কলেজের সামনের সড়ক অবরোধ করেছেন। এই কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরে কমিশন গঠন না করা পর্যন্ত তাঁরা সড়কেই অবস্থান করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা বলছেন,
সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করতে কমিশন গঠনের দাবিতে আজ বেলা সাড়ে ১১টার শিক্ষার্থীরা কলেজ ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে এসে মহাখালী রেলক্রসিং এলাকায় সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেছিলেন। পরে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সচিবালয়ে আলোচনার জন্য গেলে তাঁরা চারটার দিকে সড়ক ছেড়ে দেন। তবে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা আলোচনা শেষে সচিবালয়ের সামনে আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন। এ খবর পেয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে কলেজের অন্য শিক্ষার্থীরা মহাখালীতে সড়ক অবরোধ করেন। এরপর অবশ্য প্রতিনিধিরা সচিবালয় থেকে সরে এসে মহাখালীতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেন।
তিতুমীর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শাফায়েত শফিক সন্ধ্যা সাতটার দিকে বলেছিলেন,
সচিবালয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দুজন উপদেষ্টা—নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদের সঙ্গে কথা বলেছেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে যাওয়া প্রতিনিধিরা। সেখানে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত আসেনি। উপদেষ্টারা জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে কী করা হবে, সেটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হবে। এখন সরকার কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং সেটি বিবৃতি দিয়ে না জানানো পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ধোঁয়াশার মধ্যে আছেন। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত বিবৃতির দাবিতে তাঁরা সড়ক অবরোধ করেছেন।
তবে রাত আটটার দিকে সচিবালয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদলের একজন আবদুল হামিদ বলেন,
‘দাবির বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে সচিবালয়ে আলোচনা বসতে বারবার অনুরোধ জানানো হয়। এরপর তাঁরা সচিবালয়ে যান। প্রথমে তাঁরা (উপদেষ্টারা) ইতিবাচক ছিলেন; কিন্তু পরে তাঁরা জানান আগামীকাল আবার আলোচনায় বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তাঁদের উদ্দেশ্য মনে হচ্ছে কালক্ষেপণ করা। এ পরিস্থিতিতে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই আলোচনা শেষ হয়। এখন আমাদের দাবি, দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করার কমিশন গঠন করা। এখন আমরা আর সচিবালয়ে যাব না। কলেজে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত কমিশন করার সিদ্ধান্ত না আসবে, সড়ক ছাড়ব না।’ আর সচিবালয়ে থেকে নিজেদের অনশন প্রত্যাহার করা নিয়েছেন জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমরা এখন তিতুমীর কলেজের সামনে অবস্থান অব্যাহত রাখব।’
এর আগে একই দাবিতে আজ বেলা সোয়া ১১টার দিকে দেড় থেকে দুই হাজার শিক্ষার্থী তিতুমীর কলেজ ক্যাম্পাস থেকে মিছিল বের করেন। মিছিলটি আমতলী মোড় হয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মহাখালী রেলক্রসিং এলাকায় অবস্থান নেয়। এতে মহাখালী থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দিকের সড়কে দুই পাশেই সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। চরম ভোগান্তিতে পড়েন মানুষ। বিকেল চারটা পর্যন্ত এ অবরোধ চলে। বিকেল চারটার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসের দিকে চলে যান। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার পর শিক্ষার্থীরা আবারও সড়কে নেমে আসেন।