একশ দিনেও প্রশাসনে শৃঙ্খলা ফেরাতে পারেনি অন্তর্বর্তী সরকার। জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা সরকারকে এভাবেই মূল্যায়ন করেছেন। তারা বলছেন, অবসরে যাওয়া ব্যক্তিদের চুক্তিতে নিয়োগ দেওয়ায় প্রশাসনে গতি ফেরেনি। এছাড়া, পদোন্নতিতে সুযোগ নিয়েছেন অনিয়মে জড়িত অনেক কর্মকর্তা। সব মিলিয়ে এখনও জোড়াতালি দিয়ে চলছে সরকারি কর্মকাণ্ড, মন্তব্য বিশেষজ্ঞদের
আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামলে প্রশাসনে ব্যাপক দলীয়করণের অভিযোগ রয়েছে। যার মাধ্যমে স্বৈরশাসন হয় শক্তিশালী।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ছাত্র-জনতা। দেশ ছাড়তে বাধ্য হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর প্রশাসন ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। কিন্তু ৩ মাসে কতটা স্বাভাবিক হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন নানা মহলের।
জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন,
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ ১২ মন্ত্রণালয়ে দুই বছর মেয়াদে সচিব নিয়োগ দেওয়া হয়েছে চুক্তিভিত্তিক। এদের বেশিরভাগই ৬ থেকে ৮ বছর আগে অবসরে গেছেন। ফলে কর্মকাণ্ড ততটা গতি পায়নি বলে মন্তব্য বিশেষজ্ঞের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন,
‘গণহারে যদি এটা দেওয়া হয় তাহলে যারা এখন স্ট্রিমলাইনে আছে বা অ্যাকটিভ সার্ভিসে আছে, তারা যদি প্রমোশন না পায়, তারা যদি সচিব বা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে না যেতে পারেন, তাহলে তাদের মধ্যে হতাশা কাজ করবে।’
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ৩ মাসে প্রশাসনের ৫০১ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বিগত সরকারের সময় বৈষম্যের শিকার অনেকেই পদোন্নতি পেয়েছেন। সুবিধা নিয়েছেন অনিয়মের সাথে জড়িত অনেকেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়োগ ও পদোন্নতিতে সতর্ক হওয়া উচিত।
অধ্যাপক মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন,
‘যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে এবং বিভাগীয় বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, এগুলো সম্পূর্ণ তদন্ত করে তারপর তাদের নিয়োগ দেওয়া উচিত।’
এদিকে, বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে সচিব নেই। এ অবস্থায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বলছে, প্রশাসনের গতি বাড়াতে কাজ করা হচ্ছে।
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বাবুল মিঞা বলেন, ‘সরকারের যে পিরামিড আছে, সেটাকে একটু পিরামিড আকারে নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে। প্রশাসনের সর্বক্ষেত্রে যাতে গতিশীলতা আসে সেজন্য পদায়ন করা হচ্ছে।’
সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে এখনও অনেক পদই খালি। এসব পদে দ্রুত নিয়োগ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।